Wednesday, January 18, 2017

পুরুষ শুন্য পৃথিবী (World with Men)

কালের অতলে অনেক কিছুই হারিয়ে যায়, যাবেও। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার এক বিজ্ঞানী দাবি করেছেন, আগামী ৫০ লাখ বছরে পৃথিবী থেকে পুরুষ মানুষও হারিয়ে যাবে। তার যুক্তি, মানুষের সেক্স ক্রোমোজোম জোড়ায় বিদ্যমান এক্স ও ওয়াই ক্রোমোজোমের টিকে থাকার ক্ষমতার পার্থক্যই পুরুষের বিলুপ্তি ডেকে আনবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিজ্ঞানী বলেন, পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোম আগামী ২০ কোটি বছরেও বিলুপ্ত হওয়ার নয়। তাই অন্তত সে সময় পর্যন্ত পুরুষের বিলুপ্তি ঘটছে না। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানাবেরা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেনি গ্রেভস সম্প্রতি বলেন, আগামী ৫০ লাখ বছরের মধ্যে জীবজগৎ থেকে হারিয়ে যাবে পুরুষ প্রজাতি। অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সে দেওয়া বক্তৃতায় এই নারী গবেষক বলেন, নারীদেহে এক জোড়া এক্স ক্রোমোজোম থাকে। প্রতিটি এক্স ক্রোমোজোমে কমবেশি এক হাজার জিন (বংশগতির ধারক) থাকে। আর পুরুষের দেহে এক্স ও একটি ওয়াই ক্রোমোজোম থাকে। ওয়াই ক্রোমোজোমে মাত্র ২৭টি জিন থাকে। তা ছাড়া যখন ওয়াই ক্রোমোজোম এক্স ক্রোমোজোমের সঙ্গে মিলিত হয়, তখন ওয়াই ক্রোমোজোমের ৯০ ভাগ জিন নষ্ট হয়ে যায়। ওয়াই ক্রোমোজোম একটি বলে জিনগত ঘাটতি পূরণের সুযোগ থাকে না। কিন্তু এক্স ক্রোমোজোমের কোনো জিনগত ঘাটতি হলে অন্য এক্স থেকে সেই ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। তার মানে এক্স ক্রোমোজোমের চেয়ে ওয়াই ক্রোমোজোমের টিকে থাকার ক্ষমতা কম। ফলে 'বিবর্তনজনিত দুর্ঘটনা'য় একসময় ওয়াই ক্রোমোজোম হারিয়ে যাবে। আর ওয়াই ক্রোমোজোম না থাকার মানে পুরুষ না থাকা।তার এ গবেষণার পর যুক্তরাষ্ট্রের জীববিজ্ঞানীরা আফ্রিকা ও ইউরোপের ১৬ জন পুরুষের ওয়াই ক্রোমোজোম নিয়ে গবেষণা করে বলেন, পুরুষ জিন ধ্বংস হওয়ার নয়। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী মেলিসা উইলসন সায়েরিস বলেন, এক্স ক্রোমোজোমের সঙ্গে মিলনের সময় ওয়াই ক্রোমোজোমের ৯০ শতাংশ জিন নষ্ট হয় ঠিক; কিন্তু যেগুলো টিকে থাকে এবং কিছু জিন এক্স থেকে ওয়াইতে স্থানান্তর হয় বলে ওয়াই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আর এভাবেই টিকে থাকে এ ক্রোমোজোমটি। তিনি বলেন, ওয়াই-সংশ্লিষ্ট জিনগুলো যেহেতু হারিয়ে যায়নি এবং গত ২০ কোটি বছরে এরা নাটকীয়ভাবেই কিংবা প্রাকৃতিক নিয়মেই টিকে আছে। ওয়াই ক্রোমোজোম সুনিয়ন্ত্রিতভাবেই তার প্রয়োজনীয় জিন ধরে রাখে এবং পুরুষ প্রজননে প্রধান ভূমিকা পালন করে। সূত্র :ডেইলি মেইল অনলাইন।

No comments:

Post a Comment